রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:৪৩ অপরাহ্ন

ডিকশনারিতে নতুন শব্দ যুক্ত হয় যেভাবে

ডিকশনারিতে নতুন শব্দ যুক্ত হয় যেভাবে

স্বদেশ ডেস্ক:

কীভাবে ডিকশনারিতে নতুন শব্দ যুক্ত হয়- স্বাভাবিক প্রশ্ন। এই গুরুদায়িত্বটি যারা পালন করেন, তাদের বলা হয়ে থাকে লেক্সিকোগ্রাফার (ষবীরপড়মৎধঢ়যবৎ)। শব্দটির বাংলা পরিভাষা হলো শব্দকোষ-সঙ্কলক বা অভিধানকার। তারা স্রেফ নিজেদের খেয়াল-খুশি অনুযায়ী ডিকশনারিতে নতুন শব্দ যোগ করেন, তা কিন্তু নয়। তাদের একটি লম্বা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়।

মেরিয়াম-ওয়েবস্টারের নাম শুনেছেন! আমেরিকার সবচেয়ে প্রাচীন ডিকশনারি এটি। ১৮০৬ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল। এর পর থেকে প্রতিবছরই ডিকশনারিতে নতুন নতুন শব্দ যোগ করে আসছে তারা। নতুন শব্দ সংযোজন বলতে তারা একদম নতুন অনেক শব্দকে যেমন ডিকশনারির পাতায় নিয়ে আসে, তেমনই বিদ্যমান অনেক শব্দেরও নতুন অর্থ লিপিবদ্ধ করে।

পৃথিবীর অধিকাংশ শীর্ষস্থানীয় ডিকশনারির লেক্সিকোগ্রাফারদের কাজই হলো পড়া। প্রচুর পড়েন। প্রতিদিনের একটি বড় সময় তারা কাটান বিভিন্ন নতুন বই, সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন পড়ে। হেন বিষয় নেই যা তাদের পাঠতালিকা থেকে বাদ যায়। তারা অনুসন্ধানের চেষ্টা করেন কোনো শব্দ বা বাক্যাংশের বানান ভিন্নভাবে লেখা হয়েছে কিনা। এমন অভিনব ও চমকপ্রদ কিছুর দেখা পান, তারা তৎক্ষণাৎ সেগুলোকে টুকে রাখেন। সম্ভাব্য সব তথ্য-উপাত্তও যোগ করেন। যেমন- শব্দ বা বাক্যাংশটির বানান কী, অন্য কোনো শব্দের সঙ্গে মিল রয়েছে কিনা, কী অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে, কীভাবে ব্যবহৃত হয়েছে ইত্যাদি। পড়া ও টুকে রাখার এই গোটা প্রক্রিয়াকে বলা হয় ‘রিডিং অ্যান্ড মার্কিং’।

প্রাথমিকভাবে নতুন কোনো শব্দ বা বাক্যাংশকে শনাক্ত ও চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া সমাপ্ত হলে সেটিকে তাদের কম্পিউটার সিস্টেমে প্রবেশ করান। একটি ‘সাইটেশন’ও তৈরি করেন। সাইটেশনে থাকে প্রধান তিনটি উপাদান : শব্দ বা বাক্যাংশটি, কোন প্রেক্ষাপটে শব্দ বা বাক্যাংশটি ব্যবহৃত হয়েছে এবং সেটির উৎসসংক্রান্ত বিবলিওগ্রাফিক তথ্য। প্রধানত তিন বিষয়ের বই, সংবাদপত্রে নতুন শব্দ বা বাক্যাংশের দেখা পাওয়া যায় বেশি। সেই বিষয়গুলো হলো প্রযুক্তি, চিকিৎসাবিজ্ঞান এবং শিল্প। এই তিন মাধ্যমেই প্রতিনিয়ত নতুন নতুন উদ্ভাবন হচ্ছে। অভিধানকারদের নজর এড়ায় না সেগুলো।

কিন্তু কোনো শব্দ বা বাক্যাংশের সাইটেশন হলো মানেই সেটির ডিকশনারিতে জায়গা পাওয়া নিশ্চিত হয়ে গেল, তা নয়। একটি লম্বা প্রতিযোগিতার জন্য তাদের প্রাথমিকভাবে বাছাই করা হলো মাত্র। এর পরও তাদের লম্বা পথ পাড়ি দিতে হয়। শেষ পর্যন্ত কোনো শব্দ বা বাক্যাংশ সব বাধা পেরিয়ে ডিকশনারির পাতায় জায়গা করে নিতে পারবে কিনা, তা মূলত তিনটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে : পুনরাবৃত্ত ব্যবহার, ব্যাপক বিস্তৃৃতি ও অর্থপূর্ণতা। যেসব শব্দ তাদের বেঁধে দেওয়া তিনটি শর্তই পূরণ করতে পারে, কেবল সেগুলোই যুক্ত হয় ডিকশনারির নতুন সংস্করণে।

ইদানীং প্রযুক্তির সহজলভ্যতায় বিভিন্ন নতুন শব্দ খুব সহজে জনপ্রিয়তা ও বিস্তৃতি লাভ করছে। কেউ একজন হয়তো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মজা করে একটি শব্দ ব্যবহার করল, সেটি ভাইরাল হয়ে এমন এক পর্যায়ে পৌঁছে গেল, মানুষের কাছে শব্দটির একটি আলাদা অর্থ ও তাৎপর্য তৈরি হল। এ রকম ক্ষেত্রে খুব তাড়াতাড়িই শব্দগুলো চলে আসবে ডিকশনারির পাতায়।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877